প্রকৃতির নানা বিচিত্র সৃষ্টি মানুষকে স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত করে। আর বিশ্বজুড়ে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যা শুধু অদ্ভুতই নয়, যা দেখে মনে হতে পারে এগুলো আমাদের পৃথিবীরই সৃষ্টি নয়। এসব জায়গা শুধু মানুষকে বিস্মিত বা অভিভূতই করে না, বিজ্ঞানীদেরও রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেয়। AHK GloBal FicTion এর আজকের পর্বে আপনাদের জানাবো, বৈজ্ঞানিকভাবে অসম্ভব কিন্তু বাস্তবে রয়েছে যে পাঁচটি জায়গা।
ফুটন্ত নদীঃ
পেরুর আমাজন বনের ভেতর এমন একটি নদী আছে যার পানি সবসময় ফুটছে । আক্ষরিক অর্থে এই নদীর পানি ফুটন্ত গরম এবং পানিতে জীবন্ত কিছু পড়া পাত্রই তা গলে গিয়ে কঙ্কালে পরিণত হয় । ৯৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটেরও বেশী তাপমাত্রার এই পানি কখন থেকে কিভাবে তৈরি হচ্ছে তার সম্পর্কে কোন সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না । তবে ধারণা করা হয় কোন এক গ্রেলিং কোম্পানি এখানে খুঁড়তে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনায় ভু অভ্যন্তরের উষ্ণ গ্যাস বেরিয়ে আসতে শুরু করে যা নদীর পানির সাথে মিশে গিয়ে এমন তাপসম্পন্ন পানির সৃষ্টি করে । তবে স্থানীয়দের কাছে এই নদী একটি অইশ্যরিক শক্তির প্রতীক । প্রায়ই এই নদীর তীরে প্রার্থনার জন্য মিলিত হয় তারা ।
লেক কারাচেঃ
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এই লেকের পাশে শুধুমাত্র ঘন্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকলেই আপনার মৃত্যু নিশ্চিত। তাও আবার পরিচিত কোনো কারণে নয়, আপনার মৃত্যু ঘটবে পারমানবিক তেজস্ক্রিয়তায়। উত্তর রাশিয়ার উড়াল পর্বতমালার মাঝে অবস্থিত এই লেক কারাতে। 1957 সালে এই লেকের পাশে একটি পারমানবিক অস্ত্র তৈরির কারখানা তৈরি করেছিলো রাশিয়া। সেই সময় একটি পারমানবিক বর্জ্যের গোদাম বিস্ফোরিত হয়ে মারাত্মক তেজস্ক্রিয় পদার্থ লেক কারাচেসহ গোটা এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বর্তমানে লেকটিকে ঢেকে ফেলা হয়েছে কংক্রিট দিয়ে। কিন্তু তারপরও এই লেকের পাশে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে যে কারও মৃত্যু অবধারিত।
টেয়োসাউণ্ডঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর একটি ছোট্ট শহর টেয়োস। আর এখানেই 1990 এর দশক থেকে স্থানীয়রা একটি লো ফ্রিকুয়েন্সির টানা গুন্জনের মতো শব্দ শুনে আসছেন।দূর থেকে ভেসে আসা ইন্জিনের শব্দের মতো মনে হলেও এই শব্দের উৎপত্তি কোথায় তা আজো জানা যায় নি। অদ্ভুত হলেও শুধুমাত্র স্থানীয়রা বা কখনো কখনো পর্যটকরা এই শব্দ শুনতে পান।
যে কারনে এই রহস্যের কিনারা করার জন্য মাঠে নামেন গবেষকরা। অনেকেই বিভিন্ন তথ্য হাজির করলেন। কারও মতে ঐ শহরের পাশ দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের লাইইনের কারনে এই শব্দ হয়। আবার কারও মতে ভূ গর্ভস্থ লিথোস্ফেরিক প্লেটের নড়াচড়ার ফলে তৈরি হয় এই শব্দ। তবে যাই হোক, শব্দটি যে অদ্ভুত এ নিয়ে দ্বিমত নেই কারও।
স্নামিবিয়ার রহস্যবৃত্তঃ
স্নামিবিয়া মরুভূমির যে রহস্যটি আজও উদঘাটন করা যায়নি তা হলো FairyCircle রহস্যবৃত্ত। মরুভূমির বিস্তীর্ণ তৃণভূতিতে কিছু জায়গা পর পর দেখা যায় এই বৃত্তগুলো যেখানে কোনো গাছ, ঘাস বা কোনোকিছুই জন্মায় না। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই চক্রগুলির ব্যাস হয় 7-49 ফুট। এই চক্রগুলো কেন আর কিভাবে তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে অনেক আাগে থেকেই বিজ্ঞানীরা বিস্তর গবেষণা করে আসছে। এক ধরনের উঁইপোকার কারণে মাটিতে তেজস্ক্রিয়তা, বিষাক্ত উদ্ভিদসহ বিভিন্ন কারণ হাজির করেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু শেষপর্যন্ত ধোঁপে টিকে নি কোনোটিই। যদিও এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে এই মরুভূমির রহস্যবৃত্তের প্রকৃত কারন উন্মোচনের।
শয়তানের কেটলীঃ
যুক্তুাষ্ট্রের মিনিসোটায় লেক সুপেরিয়রের কোল ঘেষে তৈরি হয়েছে একটি স্ট্যাট পার্ক। আর এই পার্কের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে শয়তানের কেটলী নামে পরিচিত এই জলপ্রপাতটি। অদ্ভুত ভাবেই এই প্রপাতটি সমান দুইভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এর একটি সাধারন প্রপাতের মতোই বয়ে চলেছে কিন্তু বাকী অর্ধেক আক্ষরিক অর্থেই হারিয়ে গেছে পাহাড়ের অভ্যন্তরে।
অনেকের ধারনা এই পানি কোনো এক পাতাল নদীতে পড়েছে। কিন্তু এইই পাতাল নদীটি কোথায় গিয়ে শেষ হয়েছে তা এখনো বের করা সম্ভব হয় নি। বিজ্ঞানীরা নানাভাবে চেষ্টা করেছে কিন্তু প্রতিবারই তাদেরকে নিরাশ হতে হয়েছে।
Admin
AHK Global Fiction
একটি বিজ্ঞানভিত্তিক বাংলা ব্লগ বা ওয়েবসাইট। এটি সাম্প্রতিক সময়েই যাত্রা শুরু করে । এটি এই ব্লগের সমস্ত কনটেন্টগুলোকে মানুষের সহজবোধগম্য করার জন্য একটি YouTube চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করে । আমাদের এই ব্লগের সমস্ত কনটেন্ট যদি আপনার পড়তে ভালো না লাগে তাহলে সরাসরি আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে চলে যান আর সেখান থেকে ভিডিও দেখে আসুন । আর্টিকেলটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ...
Follow her @ YouTube | Facebook | Twitter
onek sundor
উত্তরমুছুন