AHK Global Fiction
প্রায় বিশ্বের কোথাও না কোথাও আগ্নেয়গিরি জীবন্ত হয়ে উঠছে । প্রচণ্ড বিস্ফোরণের পর গলিত লাভা এবং ছাই শুধু পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলছে তা নয়, প্রাণীজগতের জন্যও তা হয়ে উঠছে হুমকি ।
০১। সুপার ভাল্কায়েনোঃ সাথারন আগ্নেয়গিরি ছাড়াও বিজ্ঞানীদের মাথা ব্যথার কারণ সুপার ভাল্কায়েনো । সারা বিশ্বে বেশ কয়েকটি সুপার ভাল্কায়েনো আছে । আর এর একটি যদি বিস্ফোরিত হয় তাহলে আশেপাশের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে যা কিছু আছে তা মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাবে । আর এতো বেশী ধুলো আর ধোঁয়ার সৃষ্টি হবে যা গোটা মহাদেশেরই ক্ষতি করবে । এর ফলে পৃথিবীতে দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো প্রবেশ করত পারবে না । কোন শস্য উৎপন্ন হবে না । এবং অবধারিতভাবেই মানবজাতি অস্তিত্ব রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে ।
০২। পার্টিকেল বিস্ফোরণঃ আমরা যদি সূর্যকে একটি পারমাণবিক চুল্লি হিসেবে ধরি তাহলে মনে রাখুন একটি ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে পৃথিবীর মানুষ । প্রায় সূর্য থেকে বিপুল পরিমাণ পার্টিকেলের মেঘ মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে । একে বলা হয় "করোনাল মাস্ক ইজেকশন"। যদিও এটা সাময়িকভাবেই ঘটে । তবে এটা পৃথিবীতে আঘাত করার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ । ২০১২ সালে সূর্যের এমন একটি পার্টিকেল বিস্ফোরণ পৃথিবীর খুব কাছে চলে এসেছিলো । বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পার্টিকেলের বিস্ফোরণ যদি পৃথিবীতে সরাসরি আঘাত করে তবে যেকোনো বৈদ্যতিক যন্ত্রপাতি এবং এর সাথে সম্পৃক্ত সবকিছুই অকেজো হয়ে যেত ।
০৩। জলবায়ু পরিবর্তনঃ জলবায়ু পরিবর্তন যে মানবজাতির ধ্বংসের কারণ হতে পারে তা হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করেন না । কিন্তু কয়েকজন বিজ্ঞানী জোর দিয়ে বলে আসছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারনে পৃথিবীর ভারসাম্য বিনষ্ট হবে । যার ফলে ১৯ শতকের শেষের দিকেই পৃথিবী মানব বসবাসের অযোগ্য হয়ে যেত । অনেকেই বলছেন, পরিবেশ এবং জলবায়ু নিয়ে আমাদের উদাসীনতার কারনে ইতিমধ্যেই তা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে । পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে চলে গেছে যাতে কার্বন নিঃসরণ কমানো বা সবুজায়নের মাধ্যমে বাতাসে কার্বনের পরিমাণ সহজযোগ্য অবস্থায় নিয়ে আসা আর সম্ভব নয় । পৃথিবীর তাপমাত্রা যদি আর ২ ডিগ্রি বেড়ে যায় তাহলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা অন্তত ১ মিটার বেড়ে যাবে । এতে করে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে । খাদ্য এবং বিশুদ্ধ পানির অভাব এতোটাই বেড়ে যাবে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে । সংক্ষেপে বলতে গেলে মানবজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাবে ।
০৪। গ্রহানুঃ পৃথিবী ধবংস হওয়ার সবচেয়ে দ্রুত ও বিশ্বাসযোগ্য কারণ হচ্ছে গ্রহাণু । কারণ পৃথিবীর সাথে গ্রহাণুর সংঘর্ষ এর আগেও ঘতেছে । বহু বছর আগে ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি গ্রহানু আঘাত করেছিলো পৃথিবীর বুকে । সেই সময় ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল । গবেষকরা বলছেন, মাত্র ১ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি গ্রহানু পৃথিবীতে আঘাত করলে তার ফল হবে মারাত্মক । এতে করে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে এতো বেশী ধুলো জমবে যে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌছাতে পারবে না । এর ফলে কোন শস্য আর গাছও জন্মাতে পারবে না । যার পরিণতি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ এবং অতঃপর মৃত্যু ।
০৫। পারমাণবিক যুদ্ধঃ পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা মন থেকে ঝেরে ফেলার কোন সুযোগই নেই । গত ৭০ বছর ধরে পৃথিবীর মানুষ পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহ হুমকির মধ্যেই বাস করে আসছে । তবে এখনকার সময়টা ভিন্ন । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতই দিন যাচ্ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা ততই জোরালো হচ্ছে । আর তা যদি ঘটেই যায় তাহলে নিঃসন্দেহেই বলা যায় আমাদের আয়ু শেষ হতে যাচ্ছে । যদি কোন কারনে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো এক এক করে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে তবে মানবসভ্যতা টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে । আর যদি কেউ বেঁচেও থাকে তাহলে তার জীবনটা হবে উঠবে অসহনীয় । কারণ তখন পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যাবে । ফলস উৎপাদন অসম্ভব হয়ে যাবে । নতুন নতুন রোগের সৃষ্টি হবে । এবং সর্বোপরি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে ।